পৃথিবীর মহান কবি, দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ সমাজকর্মীরা তাদের নিজ নিজ গুণের দ্বারা মানব সম্প্রদায়ের উপকার করেছেন, করছেন। তারা সবাই সমাজ, রাষ্ট্রসহ বিশ্বের কাছে সম্মানের পাত্র বা সমাদৃত। আর এ সম্মান, শ্রদ্ধা না দিলে বা ‘যে দেশে গুণের সমাদর নেই, সে দেশে গুণী জন্মাতে পারে না’-এমনটাই বলেছেন ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
ইতিহাসবিদরা বলেন, প্রাচীন পারস্যের মহাকবি হাকিম আবুল কাশেম ফেরদৌসীর মহাকাব্য ‘শাহনামা’ রচনার প্রতিটি শ্লোকের জন্য তিনি স্বর্ণ মুদ্রা পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন। কিন্তু ইয়ামিনউদ্দৌলা আবুল কাসিম মাহমুদ ইবনে সবুক্তগিন বা সুলতান মাহমুদ তাকে স্বর্ণ মুদ্রার পরিবর্তে রৌপ্য মুদ্রা দেন। আর যথাযোগ্য মর্যাদা বা প্রাপ্য সম্মান না দেওয়ায় ফেরদৌসী রৌপ্য মুদ্রা নিতে অস্বীকার করে রাগ করে রীতিমতো চলে যান। কিন্তু সুলতান মাহমুদ যখন তার ভুল বুঝতে পারেন, তখন ফেরদৌসী আর জীবিত ছিলেন না।
এ বাস্তবতা আমাদের দেশেও বিদ্যমান। সাধারণত, গুণী ব্যক্তিরা যখন আমাদের সাথে চলাফেরা করেন, তখন আমরা অনেকে তাদের যথাযথ সম্মান, শ্রদ্ধা আর সমাদর করি না। জেনে কিংবা অজ্ঞতায় তাদের একপ্রকার অবহেলাই করি। তাদের গুণকে আমরা সম্মানের চোখে দেখি না। তাদের সামাজিক স্বীকৃতি ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে আমরা অনেকে দ্বিধাবোধ করি। অথচ তারা তাদের মেধা, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শীতা দিয়ে মানুষের উপকার করেছেন, করছেন।
যেমন, শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সেই ছাত্র জীবন থেকেই নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষের অধিকারের পক্ষে কথা বলেছেন। অধিকার বঞ্চিত মানুষদের সাহস দিয়েছেন। যেখানে অত্যাচার হয়েছে, সেখানেই শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আর এভাবেই সৃষ্টি হয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর আত্মপ্রত্যয়। মানুষ প্রতিবাদী হয়েছে, আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছে।
‘খোকা’ থেকে ‘মুজিব ভাই’ হিসেবে তিনি সার্বজনীন ভালোবাসার, শ্রদ্ধার আর নির্ভরতার মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিতি হয়েছেন। কারণ, তিনি সবার অধিকারের কথা বলেছেন। সবার প্রাপ্য সম্মান দিতে পেরেছেন। যার যতটুকু অবদান, তিনি স্বীকৃতি দিয়েছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোর বিরোধী ব্যক্তিদেরও তিনি ভালোবাসা দিয়ে জয় করেছেন। স্বাধীনতাকামী প্রতিটি বাঙালির ‘মুজিব ভাই’ হতে পেরেছেন।
এই ‘মুজিব ভাই’ থেকে ‘বঙ্গবন্ধু’ ও ‘জাতির পিতা’ হয়েছিলেন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার লড়াই-সংগ্রাম করেছেন দীর্ঘ চব্বিশ বছর। জীবনের সোনালী অংশটুকু কারাগারেই কাটিয়েছেন। স্বাধীনতাকামী বাঙালির স্বপ্নগুলো, আশা আর ভালোবাসাগুলোকে নিজের করে ভেবেছেন, আপন করে ধারণ ও লালন করেছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের কথার মধ্য দিয়ে সাড়ে কোটি বাঙালির কথার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আর তাই ৭ মার্চের মন-মন্ত্রময় ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতাকামী বাঙালির যার যা কিছু ছিল তাই নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছে। ত্রিশ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে। দুই লাখেরও বেশি নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ অত্যাচার সহ্যের লাল-সবুজের বাংলাদেশ আজ বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল।
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ ও ‘বাংলাদেশ’ এক ও অভিন্ন অংশ। বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া যেমন বাংলাদেশ কল্পনা করা যায় না, আবার বাংলাদেশের ইতিহাস রচনা করতে হলেও সবার আগে শেখ মুজিবুর রহমানের আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস লিখতে হবে। একটি ছাড়া আরেকটি অসম্পূর্ণ-এটাই ইতিহাসের পাঠ।
আবার বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশের কৃষক, কামার, কুমার, জেলে, পাহাড়ী, ছাত্র, জনতা, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিমরা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে, তাদের বাইরেও ইতিহাসের পবিত্রতা রক্ষা হবে না।
ইতিহাস একটি জাতির শিকড়। পবিত্র আমানত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার ষড়যন্ত্রে থাকার মধ্য দিয়ে এ পবিত্র আমানতের খেয়ানত শুরু করেন জিয়াউর রহমান। অশ্রদ্ধা আর অসম্মানের ঔদ্ধত্য থেকেই রীতিমতো পরিকল্পনা করে বঙ্গবন্ধু’র ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ অলিখিতভাবে নিষিদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ধ্বংস করেছে। যার ধারাবাহিকতা পরবর্তী বিএনপি’র নেতাকর্মীর মাঝেও প্রতীয়মান হয়েছে।
যেমন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মী দ্বারা তালাবদ্ধ হয়েছিল। শুধু তাই নয়, শিক্ষক ও ভদ্রলোকখ্যাত সর্বজন স্বীকৃত জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হওয়ার ফটো-ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক, দেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মতন চিকিৎসকও বিএনপি’র নেতাকর্মী দ্বারা হয়েছেন লাঞ্ছিত। জীবন বাঁচাতে রেললাইন ধরে সেই দৌড়ের দৃশ্য আজও দেশের সচেতন মহল ঘৃণা করে।
কথায় বলে, ‘আগের লাঙ্গল যেদিকে যায়, পেছনের লাঙ্গলও সেদিকেই যাবে’। অথবা সহজ করে বললে, যিনি পথ দেখান, তাকেই মানুষ অনুসরণ করে। আর স্মরণীয়, বরণীয় ব্যক্তিদের জীবন লিপি ইতিহাসের পরতে পরতে সাজানো থাকে।
সঠিক ইতিহাস একটি জাতির সুন্দর ভবিষ্যত গড়তে সহায়তা করে। সুনাগরিক সৃষ্টি করে। কিন্তু বাংলাদেশ এ দিক দিয়ে অনেকটাই গরীব। আন্তরিকতার অভাব আর অবহেলার দৃষ্টান্ত অহরহ! এদেশের কয়েকটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কার রীতিমতো ডেকে এনে উপহার দিয়েছেন স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার ব্যক্তি ও মহলদের। অন্যদিকে, মাতৃভূমির প্রখ্যাত কবি তার জাতীয় পুরস্কার না পাওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফেসবুকে। আর তখনই একশ্রেণির কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে! এদেশের সম্মানীদের যথাযথভাবে সম্মান দেওয়া হয় না। যার যতটুকু অবদান, স্বীকৃতি জানাতেও কার্পণ্যবোধ করা হয়। আবার এদেশের জ্ঞানী, গুণীদের কথা তেমনটা বিবেচনায় গ্রহণ করা হয় না। অন্যদিকে, সমালোচনা রীতিমতো অসহ্যকর পরিস্থিতি যেন!
বরং ভিন্ন মতের নামে, বাক স্বাধীনতার নামে যখন সংসদে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে মিথ্যাচার, ইতিহাস বিকৃতি করা হয়, তখন রাষ্ট্র নিরব সমর্থক হয়ে যায়! যখন ওয়াজ-মাহফিলের নামে জাতীয় বুদ্ধিজীবী-রাজনীতিবিদের নামে অপপ্রচার করা হয়, হত্যার ফতোয়া জারি করা হয়, তখনও রাষ্ট্র নিরব দর্শক-সমর্থক হয়ে পড়ে! আবার যখন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান লেখক-ব্লগারদের চাপাতির কোপে হত্যা করে, তখন রাষ্ট্রযন্ত্রের কতিপয় কর্মকর্তার দায়িত্বের প্রতি অদক্ষতা আর উদাসহীনতার দৃশ্য ভেসে বেড়ায়। রাষ্ট্র নিজেই যখন বিচারহীনতার শ্রেণিবৈষম্য বা অপসংস্কৃতি লালন করে, তখন ব্লগার অভিজিৎসহ অন্যান্য লেখকদের হত্যার বিচারের মাঝে ‘আশাহত’ দাঁড়িয়ে পড়ে, ইতিহাস কলঙ্কিত হয়।
‘ইতিহাসের শিক্ষা হলো ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না’- কথাটি প্রখ্যাত ব্রিটিশ লেখক-নাট্যকার বার্নাড শ তার নিজ দেশের প্রেক্ষাপট নিয়ে বললেও বাংলাদেশের বেলায় কথাটি একেবারেই অমূলক নয়। নিকট অতীতের রাজনীতির পর্যবেক্ষণ করলে এটিই সত্য বলে প্রতীয়মান। এদেশের রাজনীতিবিদরা যদি ইতিহাস থেকে সঠিক শিক্ষা নিতেন, বাস্তবতা ধারণ করতেন তাহলে স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর বাংলাদেশ আজ এতটা কঠিন অবস্থার মুখোমুখি দাঁড়াত না। জঙ্গি-মৌলবাদী অপশক্তিও ঔদ্ধত্য দেখানোর সাহস, সুযোগ পেত না। হাজার বছরের বাঙালি জাতীয়তাবাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ধ্বংস করার হুমকি ধামকি দিত না।
কারণ, আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিচ্ছি না। জাতীয় ব্যক্তিত্বদের যথাযথ মূল্যায়ন করছি না বলেই আজ মানবতা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। অপশক্তি চারপাশ দখল করার চেষ্টা করছে। যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, যে বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতাকামী বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল-আজ এখানেও হতাশার প্রতিচ্ছবি দৃশ্যমান হয়েছে। রাজনীতি যখন আমলা কিংবা প্রশাসন নির্ভর হয়ে পড়ে, রাজনীতির চর্চায় কিংবা কর্মসূচিতে যখন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট দখল করে, যখন রাজনীতিবিদের মতন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তার বক্তব্য-বিবৃতি প্রতীয়মান হয়, তখন গোটা রাজনীতির সাথে রাজনীতিবিদও থমকে দাঁড়ায়। লজ্জা পায় রাজনীতি আর অবমূল্যায়ন করা হয় প্রখ্যাত রাজনীতিবিদের।
পঞ্চাশের ঘরে বাংলাদেশের বয়স। আজও দেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, লেখক, গবেষক, সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিকদের যেন পাশ কাটানোর কৌশল বিদ্যমান। বেঁচে থাকা অবস্থায় অনেকের প্রাপ্য সম্মানটুকু থেকে বঞ্চিত হলেও কবরে কিন্তু ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পিত হয়। আবার অনেককে রীতিমতো অবহেলাই করা হয়।
তিন জানুয়ারি দেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, যিনি আমৃত্যু উত্তারিধারসূত্রে শুদ্ধ রাজনীতির চর্চা করেছেন সেই সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় প্রয়াণ দিবস ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই ব্যক্তি পর্যায়ে মাটি ও মানুষের রাজনীতির ধারক ও বাহক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আত্মার মাগফেরাত/শান্তি কামনা করলেও আওয়ামী লীগের মতো ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল দিনটিকে রীতিমতো অবহেলা করেছে! দলের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে অবমূল্যায়ন করেছে! আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী স্বয়ং আওয়ামী লীগ থেকেই পালন করা হয়নি, এরচেয়ে দুঃখজনক, হতাশার বিষয় উদীয়মান রাজনীতিবিদের কাছে আর কী হতে পারে?
আর এই হতাশার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ শুধু আগামীর রাজনীতিবিদের মাঝেই দৃশ্যমান হয়নি, দেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, লেখক, গবেষক, সংবাদ উপস্থাপকসহ বিভিন্ন গ্রহণযোগ্য শ্রেণিপেশার মানুষের ক্ষোভগুলোও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে যোগ্যদের ‘অবমূল্যায়ণ’ তিক্ত-বিরক্তির প্রতিক্রিয়া শোনা গেছে। অনেকে আবার ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মকাণ্ড নিয়েও সমালোচনা করেছে।
আমি উপরের লাইনেই উল্লেখ করেছি, ‘সামনের লাঙল যেদিকে যাবে, পেছনের নাঙলও সেদিকেই এগুবে। আওয়ামী লীগ যেখানে তার দলের গ্রহণযোগ্য ও শুদ্ধ রাজনীতির ধারক-বাহক, সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী দলীয়ভাবে পালনে অবহেলার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, সেখানে পেছনের উদীয়মান রাজনীতিবিদের দোষইবা কতটুকু!
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কেমন রাজনীতিবিদ ছিলেন- এটা এ লেখায় নতুন করে তুলে ধরার প্রয়োজনবোধ করছি না। তবে, ‘আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতির নাম; যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ত্যাগ এবং আত্মত্যাগের মহান ইতিহাস’-সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এই কথাটি বর্তমান আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরাম কতটুকু মনে রেখেছে-এটি মূল্যায়নের দাবি রাখে। আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বক্তব্যের শেষাংশে তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমাদের রক্ত খাঁটি, আমাদের রক্ত পরীক্ষিত। নেতা ও কর্মীদের আত্মত্যাগে একটি অনুভূতির জন্ম হয়েছে। দলের সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই আমাদের স্তব্ধ করে দিতে পারে।’
বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের মতোই সন্তান সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও যৌবন জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন, “আওয়ামী লীগ একটি দল নয়, আওয়ামী লীগ একটি ত্যাগের নাম, আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতির নাম যে অনুভূতি ত্যাগের এবং আত্মত্যাগের।”
শুদ্ধ রাজনীতির পথ প্রদর্শক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে দলীয়ভাবে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ না করে উদীয়মান রাজনীতিবিদের সামনে কী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সেটা আশাকরি উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ তার অভ্যন্তরীণ ফোরামে আলোচনা করবে।
তবে, ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনাব মাহবুব উল আলম হানিফ ভাইকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। বেলা শেষে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী নিয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও তার রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন।
ঐতিহাসিকভাবে আওয়ামী লীগ ইতিহাস বিকৃতি কিংবা মুছে ফেলার রাজনীতি নয় বরং ইতিহাস সৃষ্টির রাজনীতি করে। আর এটাই আওয়ামী লীগের ‘ঐতিহ্য’। আর এই ঐতিহ্য থেকে বিচ্যুতি ঘটলে, আওয়ামী লীগের নিজস্বতা বলতে কিছু থাকবে না। আওয়ামী লীগ সৃষ্টি ও স্বীকৃতি দিয়েই উদীয়মান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তৈরি করবে-এই প্রত্যাশায় ড্যানিশ প্রবাদ “পানির গভীরতা নাকের কাছে উঠে আসার আগেই সাঁতার শিখে নাও।”
0 Comments